ডাইনী অপবাদ দিয়ে এক পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগে ধৃত গুনিন সহ পাঁচ অভিযুক্ত

17th June 2020 6:59 pm বর্ধমান
ডাইনী অপবাদ দিয়ে এক পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগে ধৃত গুনিন সহ পাঁচ অভিযুক্ত


নিজস্ব সংবাদদাতা ( কালনা ) :  ডাইনি অপবাদ দিয়ে এক মহিলা ও তার পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠলো বেশ কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রামে।এই ঘটনা জানার পরেই নড়ে চড়ে বসে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।এই ঘটনায় জড়িত এক গুনিন সহ পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেফতারও করে ও বুধবার তাদের কালনা মহকুমা আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে ,ধৃতদের নাম  ধনঞ্জয় বৈরাগ্য,কেনা মাঝি,সুকুমার ধারা,হারু মাঝি ও রাজু মাঝি। এদের মধ্যে গুনিন হলেন ধনঞ্জয় বৈরাগ্য।তাঁর বাড়ি কাটোয়া এলাকায়।বাকি চার ধৃত ব্যক্তি নির্যাতিতার পরিবারের প্রতিবেশী।
                       মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রামের উত্তরপাড়ায় এই ঘটনার পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের ধরে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে।বুধবার ধৃতদের পেশ করে কালনা মহকুমা আদালতে।যদিও বিচারক পাঁচ জনেরই জামিন মঞ্জুর করেছেন।প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মাঝের গ্রাম উত্তর পাড়ায় বসবাস করেন সরস্বতী সাঁতরা ও তাঁর পরিবার।ওই পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ কিছুদিন আগে কাটোয়া  এলাকার ওই গুনিন ব্যক্তি গ্রামে আসেন। তিনি নিদান দেন গ্রামে এক ডাইনি রয়েছে।তার জন্যই গ্রামের মানুষজনের ক্ষতি হচ্ছে।অবিলম্বে গ্রামের ওই ডাইনি দূর করতে হবে।না হলে ক্ষতি থেকে গ্রামবাসীদের মুক্তি মিলবে না।গুনিনের কথা মতো প্রতিবেশীরা সরস্বতী সাঁতরাকে ডাইনি হিসাবে চিহ্নিত করে।এরপর তাকে ও তার পরিবারকে একঘরে করে দিয়ে নানা ভাবে নির্যাতন চালানো শুরু করে বলে অভিযোগ।এই নির্যাতনের কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিও অফিসেও জানান
সরস্বতী সাঁতরা ও তাঁর পরিবার।ঘটনা জানার পরেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঘটনায় জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে।পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে।সাঁতরা পরিবারের সদস্যরা এদিন বলেন,অভিযুক্তরা সবাই গ্রেফতার হয়নি।তাই এখনও আতঙ্কে রয়েছেন বলে পরিবার সদস্যরা জানিয়েছেন





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।